আজ ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

যে ৬ বাঙালী কীর্তিমানের কারণে ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ১২ জুলাই


চাটগাঁর সংবাদ ডেস্ক: অবিভক্ত বাংলার ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ছয় জন কীর্তিমানের কারণে ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে ১২ জুলাই। তাঁদের সংক্ষিপ্ত কীর্তি পাঠকদের কাছে উল্লেখ করার মতো। চলুন জেনে নেয়া যাক আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা, বিশিষ্টজনের অজানা ও গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

বাংলার শাসক হোসেন কুলি খান:
১৫৭৬ সালে হোসেন কুলি খান বাংলার শাসক নিযুক্ত হন। তিনি মুর্শিদাবাদে অবস্থান করে তাঁর সহকারী হোসেন কুলী খান এবং হোসাইন কুলীর সহকারী হোসেন উদ্দিন খানকে (১৭৪৪-১৭৫৪) ঢাকায় দায়িত্ব পালন করান।

‘নবযুগ’ পত্রিকা: ইতিহাসের এই দিনে কাজী নজরুল ইসলাম ও মুজফ্‌ফর আহমদের যুগ্ম সম্পাদনায় ‘নবযুগ’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। নবযুগ বাংলাদেশের জাতীয় কবি (বিদ্রোহী কবি) কাজী নজরুল ইসলাম ও রাজনীতিবিদ কমরেড মুজফ্‌ফর আহমদের যুগ্ম সম্পাদনায় প্রকাশিত হওয়া পত্রিকা। এটি ১৯২০ সালের ১২ জুলাই সান্ধ্য পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হওয়া শুরু করে। এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন শের-এ-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক। তিনি নিজ অর্থে এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে এ পত্রিকায় অনেক কবিতা ছাপা হয়। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার এ পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত করে ও পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। শের-এ-বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের চেষ্টায় পত্রিকাটি আবার প্রকাশিত হয়। পরে ফজলুল হকের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নজরুল ও মুজফ্ফর আহমদ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করলে পত্রিকাটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৪২ সালে ফজলুল হক বাংলার প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁর উদ্যোগে এবং নজরুলের সম্পাদনায় পুনরায় পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। এ সময় কাজী নজরুল ইসলাম দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে খুলনার মাওলানা আহমদ আলী সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুবছর পত্রিকাটি চালু থাকার পর পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অনেক বছর পর কবি কাজী নজরুল ইসলাম, রাজনীতিবিদ কমরেড মুজফ্‌ফর আহমদ ও শের-এ-বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের আদর্শে কবি ও সাংবাদিক এ আর আহম্মেদ সুজন এর হাত ধরে ৫ এপ্রিল ২০২১ সালে সত্য ও সাহিত্যের খুঁজে স্লোগান নিয়ে পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণ চালু হয়।

যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ: তিনি ১২ জুলাই ১৮৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ঊনবিংশ শতকের ভারতীয় বাঙালি সংস্কৃত পণ্ডিত, চিন্তাবিদ, সাংবাদিক ও জনপ্রিয় জীবনীগ্রন্থের প্রণেতা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিশেষ প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। তাঁর সংগ্রামী জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার জন্য স্বামী বিবেকানন্দ ও শ্রী অরবিন্দ দ্বারা প্রশংসিত ব্যক্তিত্ব। ১২ জুন ১৯০৪ তিনি পরলোক গমন করেন।

শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী: তাঁর জন্ম ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই জুলাই বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার বারেঙ্গ গ্রামে। তাঁর পিতার নাম হরসুন্দর চক্রবর্তী। ১৮৮৯-৯০ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষকতার কাজ নেন। কিছুদিন পর কলকাতায় চলে যান। প্রথমে অ্যাংলোভেদিক স্কুলের শিক্ষক নিযুক্ত হন এবং “প্রতিবেশী” নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন এই পত্রিকাটিই পরে ‘পিপল অ্যান্ড প্রতিবেশী’ নামে দ্বিভাষিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। সাংবাদিকতার সূত্রেই তিনি স্বদেশী আন্দোলনে অংশ নিতে আরম্ভ করেন। ক্রমে স্বদেশী দলের অরবিন্দ ঘোষ, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় ও তাঁদের সমপর্যায়ের নেতারূপে গণ্য হন। নিজের পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হলে তিনি বিখ্যাত বিপ্লবী পত্রিকা ” বন্দে মাতরম” এর সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বেঙ্গলি’ পত্রিকায় সহকারী সম্পাদকের কাজ করতে থাকেন। এরপর নিজের সম্পাদনায় বিখ্যাত ইংরাজী দৈনিক ‘সার্ভেন্ট’ প্রকাশ করেন। বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি হন তিনি। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি আন্দোলনে সামিল হন।

বিমল রায়: ১৯০৯ সালের ১২ জুলাই বাংলাদেশের অধুনা ঢাকার সুত্রাপুরের এক জমিদার বাড়িতে জন্ম হয় বিমল রায়ের। ঢাকার জগন্নাথ কলেজে পড়াকালীন বাবা মারা যান। এরপর মা ও ভাইদের নিয়ে বিমল চলে যান কলকাতায়। তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক ছিলেন।

সুকুমারী ভট্টাচার্য: তিনি ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য-ইতিহাস-সংস্কৃতির বিদগ্ধ গবেষক ও প্রখ্যাত অধ্যাপক। তাঁর আদি নিবাস চিত্রা নদীর তীরে শিঙে-শোলপুর গ্রাম হলেও, ১৯২১ সালের ১২ জুলাই মেদিনীপুরের মামাবাড়িতে সুকুমারী দেবীর জন্ম। সারা জীবনে বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় সমান দক্ষতায় তিরিশটিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর